Friday, May 9, 2025
  • Login
  • হোম
  • পরিচিতি
  • প্রবন্ধ
  • কবিতা
  • গল্প
  • সাক্ষাৎকার
  • বই আলোচনা
  • আলোকচিত্র
  • প্রতিবেদন
  • অনুবাদ সাহিত্য
  • বিশেষ আয়োজন
  • বিবিধ
  • কবি-লেখকবৃন্দ
No Result
View All Result
  • হোম
  • পরিচিতি
  • প্রবন্ধ
  • কবিতা
  • গল্প
  • সাক্ষাৎকার
  • বই আলোচনা
  • আলোকচিত্র
  • প্রতিবেদন
  • অনুবাদ সাহিত্য
  • বিশেষ আয়োজন
  • বিবিধ
  • কবি-লেখকবৃন্দ
No Result
View All Result
No Result
View All Result
Home বিশেষ আয়োজন

এই ব্যথাটা অন্য ব্যথা।। হেমন্ত হাসান

Chatal by Chatal
December 16, 2021
in বিশেষ আয়োজন
A A
0
এই ব্যথাটা অন্য ব্যথা।। হেমন্ত হাসান

ডিসেম্বর এলেই তোরাব আলীর মাজার ব্যথাটা বাড়তে থাকে খুব। ডিসেম্বর মাস এলেই তার হাঁটুসহ সমস্ত গিঁটের ব্যথা ভীষণ বেড়ে যায়। ডিসেম্বর এলেই তোরাব আলীর বুকের ব্যথা বাড়ে। ১৯৭১ এর পর বাকীটা জনম ধরে প্রতিটা ডিসেম্বরই তাকে একই অনুভূতি দিয়ে যাচ্ছে। ডিসেম্বর শুরু হয়, মাইকে মাইকে চেতনার গান বেজে ওঠে। বেজে ওঠে যুদ্ধ দিনের স্মৃতি। দেয়াল ভরে উঠে রাজনৈতিক ব্যাক্তিবর্গের বিজয়ের শুভেচ্ছার ভুলে ভরা পোস্টারে। কুয়াশার জাল ছিড়ে মিছিল এগোয় প্রতিদিন। স্লোগানে স্লোগানে মনের অলগলি ছেয়ে আসতে থাকে হাহাকারের কুয়াশায়।

তোরাব আলী বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। চুড়ান্ত সাদাসিধে একজন মানুষ। অনেকটাই ভীতু প্রকৃতির। কোন ঝামেলায় জড়িয়ে যাবার মত সাহস তার কোন কালেই ছিল না। তবু একবার ঝামেলা এসে তার সাথে জড়িয়ে গিয়েছিল। সময়টা ১৯৭১ এর নভেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ। তখনও কেউ জানেনা, স্রষ্টা আর মাত্র তিন সপ্তাহ পরেই এই দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষে বিজয় লিখে রেখেছেন। গ্রামের নাম সুন্দরপুর। ঝিনাই নদীর কোলে ছোট্ট শান্ত এই গ্রাম নামের মতই সুন্দর। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মত এই গ্রামেও একদিন অসুন্দরের ছায়া পড়লো। গ্রামের প্রাইমারি স্কুলে ক্যাম্প করল পাকিস্তানী সৈন্যরা। তাদের নোংরা বুটের ছাপ পড়তে থাকলো গ্রামের আনাচে কানাচে। হিন্দু বাড়িগুলো আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল প্রথম রাতেই।  পরের দিন থেকে শুয়োরগুলো হানা দিতে থাকল ঘর থেকে ঘরে। নির্বিচারে মানুষ মরতে থাকল খুব – যে গল্প জানে সবাই।

একদিন দুপুরের আগে আগে উঠোনের পাশে জাম গাছটার নিচে বসেছিল তোরাব। একা একা বসে বসে ভাবছিল— এ কী হয়ে গেল দেশটার! চোখের পলকে এমন গোছানো এই গ্রাম কেমন লন্ডভন্ড হয়ে গেল! এত সহজে এত এত মানুষ মেরে ফেলা যায়— কোনদিন ভাবেনি সে। মানুষ এতটাই পৈশাচিক হতে পারে— তাও জানা ছিল না তার।

তোরাবের মাঝ বয়েসী চাচা সুরুজ মিয়া এসে তোরাবের সামনে দাঁড়ায়। তার গায়ে ধোয়া পাঞ্জাবি। মাথায় জিন্নাহ টুপি। চোখে সুরমা। মুখ উপচে পরছে পানের রসে। দেশ পুড়ে অঙ্গার হয়ে যাচ্ছে তাকে দেখে কে বলবে সে কথা? তার চেহারায় কেমন যেন আনন্দ কিংবা উল্লাসের বুনো রঙ। সে তোরাবকে বলে— “দ্যাশে ইস্টি—কুটুম আইছে আর তুই সারাদিন এবা কুইচা মুরগির নাগাল ঝিম মাইরা থাকস ক্যা?”

কুটুম! তোরাব যারপরনাই অবাক হয়। বাড়িতে কুটুম আসে রসগোল্লার হাঁড়ি নিয়ে। আর এরা এসেছে বন্দুক হাতে। তোরাব বলে, “যারা কারণ ছাড়াই ঝাকে ঝাকে মানুষ মারে, ঘরবাড়ি আগুনে পোড়ায়া দেয়— তারা তোমার কুটুম নাগে?”

সুরুজ মিয়ার হাসিমুখটা চেপে আসে। রাগ দেখানোর ভাব করে সে বলে, “মানুষ মারে মানে? হিন্দুরা মানুষ? তারা কি আংগোর জাতের? আংগোর ধর্মের? নাকি তারা আংগোর দ্যাশের মানুষ?”

—        কোন দ্যাশের মানুষ তারা?

—        তুই পোলাহান মানুষ এত কথা কস ক্যা?

—        আমরা সবাই এই দ্যাশেরই মানুষ কাকা। দ্যাশ নিয়া কারও সাথে তো আংগোর কোনদিন গন্ডগোল অয় নাই। ধর্ম নিয়াও কিলাকিলি বাজে নাই কুনোসুম।

—        তুই এইসব কথা কুনু হিকলি তোরাব? সুরুজ মিয়ার মুখের রেখা বদলাতে থাকে।

—        হিকন নাগে না কাকা। শুয়োরের বাচ্চাগুনা আমার বন্ধু গোপালের বাড়িঘরে আগুন দিছে। তার বাপ মায়রে গুলি কইরা মারছে। পলায়া যাওনের আগে আমার দোস্ত আমার নগে একবার দেহাও করবার পারে নাই! বলতে বলতে ডুকরে কেঁদে ফেলে তোরাব।

তোরাবের এমন কান্ড দেখে সুরুজ মিয়া একেবারে হাহাকার করে উঠে। কি উল্টাপাল্টা বলছে এই ছেলে! সে বলে, “তোরাব তুই কি পাগল অইছস?  ভুলেও জানি আর মুখ দিয়া অবা কথা না বাইর অয়। নিজে তো বাচবিই না, আংগোরেও মারবি”।

—        আন্নেরে ক্যারা কইছে যে আমি এই জাহান্নামের মইদ্যে বাচবার চাই?

সুরুজ মিয়া বিষ্ময় নিয়ে তাকিয়ে থাকে তার দিকে। তারপর বলে, “তুই নাঅয় মরবার চাস ঠিক আছে, তর বাপ মাওরেও কি মারবার চাস?”

এবার আর কোন কথা বের হয়না তোরাবের মুখ দিয়ে। সে মাথা নিচু করে বসে থাকে।

সেদিন বিকেলে সুরুজ মিয়া তাকে ক্যাম্পে নিয়ে যায়। পাকিস্তানি সৈন্যদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। ক্যাম্পে তাকে বাবুর্চির কাজে রেখে দেয় সৈন্যরা। গর্ব আর খুশিতে সুরুজ মিয়ার বুকের ছাতি ফুলে ফেঁপে একাকার হয়ে যায়। সৈন্যরা সুরুজ মিয়াকে সাথে নিয়ে সারা গ্রাম ঘুরত। পুরুষদের ধরে এনে পিটিয়ে জখম করত। লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে লাশ ফেলে দিত ডোবায়। মেয়েদের ধরে এনে আটকে রাখত বন্ধ ঘরে। সেখানে কী হতো তার বর্ণনা দেয়া যায়না। তোরাব কতবার ভেবেছে, রান্নায় বিষ মিশিয়ে শুয়োরগুলোকে শেষ করে দেবে। কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি কখনও। সারাক্ষণ একটা শুয়োর বন্দুক হাতে থাকত তার কাজের পাহারায়।

সপ্তাহ খানেক পর তোরাব খবর পেল, দুই মাইল দূরে ক্যাম্প করেছে মুক্তিযোদ্ধারা। জঙ্গলের ভেতর এক পরিত্যাক্ত মন্দিরের ভেতর। তাদের খাবার দাবারে খুব সমস্যা হচ্ছে। সময় মানুষকে বদলে দেয়। ভীতু তোরাব অদম্য সাহসী হয়ে উঠল। একদিন গভীর রাতে সে গরম ভাত আর মুরগির ঝোলের গামলা মাথায় করে হেঁটে চলে গেল মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে। কী পরম তৃপ্তি নিয়েই না খেয়েছিল সবাই সেদিন। কয়দিন পর তারা ভাত খেয়েছিল জানা নেই। তোরাব আলীর এখনও স্পষ্ট মনে আছে, মুক্তিদের ক্যাপ্টেন তাকে বুকে জড়িয়ে ধরেছিল।

ফলস্বরূপ পরেরদিন সকাল থেকে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন চালানো হয়েছিল তোরাবের উপর। বন্দুকের বাট দিয়ে পিটিয়ে ভেঙে দেয়া হয়েছিল তার হাত পা। হাতের আঙুল। টানা চব্বিশ ঘন্টা গাছের সাথে বাঁধা অবস্থায় রাখা হয়েছিল তাকে। ধীরে ধীরে এগিয়ে আসা আজরাইল তার পর্যন্ত এসে পৌছাবার ঠিক আগ মুহুর্তে মুক্তিবাহিনী ক্যাম্প আক্রমন করে। পাকিস্তানি শুয়োরগুলোকে পরাজিত করে স্কুলের মাঠে লাল সবুজের পতাকা উড়ায়। জানে বেঁচে যায় তোরাব।

তোরাব এখনও বেঁচে আছে। বয়োবৃদ্ধ তোরাবের গা ভরতি এখনও পঞ্চাশ বছর আগের নির্যাতনের চিহ্ন। বয়সের কারণে তার শরীর নড়বড়ে হয়ে গেছে। লাঠি ছাড়া হাঁটতে পারেনা সে। লাঠি ভর দিয়েই গত কয়েক বছর ধরে সে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান দেখতে স্কুল মাঠে যায়। ছোট ছোট বাচ্চারা কত সুন্দর কুচকাওয়াচ পরিবেশন করে। সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত গায়। হানাদার তাড়ানোর নাটিকা মঞ্চস্থ করে— দূর থেকে দেখে বুক ভরে যায় তোরাব আলীর। শুধু মঞ্চের চেয়ারগুলোর দিকে তাকালে, এলাকা অন্ধকার করে দেয়া বিশাল বিশাল পোস্টার আর ব্যানারের দিকে তাকালে তার বুকে বিষ এসে ভিড় করে। এই সমাজ এমন কিছু মানুষ বা তাদের অনুসারীদের এমন সব স্থানে অধিষ্ঠিত করেছে যারা হয়তো এই সমাজই চায়নি। সুযোগ পেলেই হয়তো তারা আবার এই সমাজকে পাকিস্তান বানিয়ে ছাড়বে। আশ্চর্য এই সমাজ তার অধিপতি নির্বাচন করেছে খুঁজে খঁজে এমন সব ব্যাক্তিকে – তারা হয়তো এই সমাজের মানুষই না। তোরাব নিজেই তাদের চেনে না। অথচ কত নির্দ্বিধায় তোরাব আলীকে ভুলে বসে আছে এই সমাজ। তার কর্ম , তার ত্যাগ, তার উৎসর্গের খবর এই সমাজ মনেই রাখলো না!

প্রতিটি বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান মাঠের এক কোনায় কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখে তোরাব আলী। বাচ্চাদের পরিবেশনা শেষ হলে যখন নেতারা মাইক নিয়ে ঝাপিয়ে পরে তোষামোদ, মিথ্যা আর মুখস্থ বক্তৃতায় – তখন আলগোছে তোরাব আলী বাড়ির পথ ধরে। এই বয়সে এই শরীরে নড়তে চড়তে তার ভীষণ কষ্ট হয়। তার থেকেও হাজার গুন বেশি কষ্ট হয় তার বুকের গহীন প্রকোষ্ঠে। আজকাল পথে ঘাটে দেখা হলে অনেকেই তাকে জিজ্ঞেস করে শরীরটা কেমন? শরীরের যন্ত্রণা বা ব্যথা কিছু কমলো কিনা? এইসব ব্যথার আড়ালে যে গোপন কিছু ব্যথা আছে তার— সেইসব ব্যথার কথা তাকে কেউ কখনও জিজ্ঞেস করেনি এ জীবনে!

 

হেমন্ত হাসান– জন্মস্থান টাঙ্গাইল। বর্তমানে তিনি একটি প্রাইভেট ব্যাংকে কর্মরত আছেন।

Tags: গল্পচাতালমহান বিজয় দিবস ২০২১হেমন্ত হাসান
Previous Post

দীর্ঘ কবিতা।। সমর চক্রবর্তী

Next Post

একাত্তরের দিনগুলি-জাহানারা ইমাম।। শিশির রাজন

Chatal

Chatal

Next Post
একাত্তরের দিনগুলি-জাহানারা ইমাম।। শিশির রাজন

একাত্তরের দিনগুলি-জাহানারা ইমাম।। শিশির রাজন

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • About
  • Advertise
  • Privacy & Policy
  • Contact
বাংলামটর, ঢাকা-১০০০, বাংলাদেশ।
ই-মেইল: [email protected]

© 2021 Chatalbd - Design & Developed By Developer Rejwan.

No Result
View All Result
  • হোম
  • পরিচিতি
  • প্রবন্ধ
  • কবিতা
  • গল্প
  • সাক্ষাৎকার
  • বই আলোচনা
  • আলোকচিত্র
  • প্রতিবেদন
  • অনুবাদ সাহিত্য
  • বিশেষ আয়োজন
  • বিবিধ
  • কবি-লেখকবৃন্দ

© 2021 Chatalbd - Design & Developed By Developer Rejwan.

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In