Sunday, May 11, 2025
  • Login
  • হোম
  • পরিচিতি
  • প্রবন্ধ
  • কবিতা
  • গল্প
  • সাক্ষাৎকার
  • বই আলোচনা
  • আলোকচিত্র
  • প্রতিবেদন
  • অনুবাদ সাহিত্য
  • বিশেষ আয়োজন
  • বিবিধ
  • কবি-লেখকবৃন্দ
No Result
View All Result
  • হোম
  • পরিচিতি
  • প্রবন্ধ
  • কবিতা
  • গল্প
  • সাক্ষাৎকার
  • বই আলোচনা
  • আলোকচিত্র
  • প্রতিবেদন
  • অনুবাদ সাহিত্য
  • বিশেষ আয়োজন
  • বিবিধ
  • কবি-লেখকবৃন্দ
No Result
View All Result
No Result
View All Result
Home বিশেষ আয়োজন ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস

জাতিসত্ত্বার অনিঃশেষ ওঙ্কার ঃ মুক্তিযুদ্ধের কবিতা ।। এমরান হাসান

Chatal by Chatal
June 2, 2021
in ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস, বিশেষ আয়োজন
A A
0

একটি স্বাধীন দেশের ইতিহাস,ঐতিহ্যের ধারক-বাহক তার সাহিত্য,সংগীত,চিত্রকলা এবং চলচ্চিত্র।বাংলাদেশের কবিতার যে বিশাল এবং বিস্তীর্ণ পটভূমি আজ নির্মিত তার কাব্যচিন্তা আর দর্শনের নানামুখী ধারার বিবর্তনের পুরো অংশ জুড়েই প্রামাণ্যরূপে প্রতিয়মান আমাদের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধোত্তর বাংলাদেশের কবিতা।লক্ষণীয় যে, মানব সভ্যতার সুদীর্ঘ ক্রমবিকাশকে মুখ্য করে বোধ আর চেতনার প্রস্ফুটিত পুষ্পউদ্যান নির্মাণ করতে শুরু করেন গত শতাব্দীর চল্লিশ,পঞ্চাশ এবং ষাট দশকের কবিরা তাদের কবিতায় তুলে ধরেছিলেন শেকড়সন্ধানী চেতনা আর নিজস্ব সংস্কৃতির স্বার্থক উপাস্থতি।মূলত গত শতকের ষাট দশক থেকেই বাংলাদেশের কবিতায় তীব্রতর হতে শুরু করেছিলো স্বাধীনতার কাংখা। এ সময়ের কবিতাকে সামান্য বোধ থেকে অনন্ত অসীমের কাতারে তড়ান্বিত করেছেন এ সময়ের কবিরা তাদের কবিতায়।যার চেতনায় আর সময়ের প্রয়োজনে বাংলাদেশ ধীরে ধীরে এগিয়ে যেতে থাকে এক বৃহৎ বিস্ফোরণের দিকে।এ সবের ফলশ্রুতিতেই ১৯৬৯ এর গণঅভুত্থ্যান,১৯৭০ সালের নির্বাচন,১৯৭১ সালের  ২৫ মার্চের গণহত্যা এবং তারপর দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের ফসল ১৬ ডিসেম¦রে জন্মানো স্বাধীন এবং সার্বভৌম বাংলাদেশ।কবিতা যার দীর্ঘ দর্পণ।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে যারা অস্ত্র ধারণ করেছিলেন তাদের অনুপ্রাণিত করেছিল সাধারণ মানুষ, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী সহ অগণিত বুদ্ধিজীবী। এই বিশাল প্রেক্ষাপটকে হৃদয়ে ধারণ করে এদেশের কবিরা অস্ত্র ধারণ করেছিলেন তাদের কবিতার মাধ্যমে। রণাঙ্গনে,গভীর রাতের তন্দ্রায়,জাগরণে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গী হয়েছিল এসব কবিতা। কেবল বাংলাদেশের কবিরাই নন পশ্চিমবঙ্গ সহ বিশ্বের অনেক দেশের কবিরা তাদের লেখায় প্রতিবাদ করেছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানী জানোয়ারদের এই নির্বিচার গণহত্যার। এদেশের কবিরা কবিতার ভেতরে বারবার তুলে এনেছেন রণাঙ্গনের দৃশ্যপট সহ একান্ত ব্যক্তিগত কিছু অনুভ‚তি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক মহান সাক্ষী এই সব কবিতা।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে রচিত কবিতার পাশাপাশি যুদ্ধপরবর্তী কবিতাগুলোতেই তীব্রতর হয়েছে যে চিত্রকল্প নির্লিপ্ত ভাষায় বলা যায়, এসব কবিতা বাংলাদেশের শুধু নয় বিশ্বসাহিত্যের মঞ্চে  সেগুলো এক বৃহৎ ভাস্কর্য, জাতিসত্ত্বার অমূল্য দলিল কে লিখেননি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কবিতা? পল্লীকবি জসীম উদ্দীন,সুফিয়া কামাল,আবুল হোসেন,আহসান হাবীব,আবু হেনা মো¯তফা কামাল,আল মাহমুদ,শামসুর রাহমান,সিকান্দার আবু জাফর,আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ,আবু বকর সিদ্দিক,আসাদ চৌধুরী, নির্মলেন্দু গুণ,আবুল হাসান,অসীম সাহা,সৈয়দ শামসুল হক, বেলাল চৌধুরী,মহাদেব সাহা,মাকিদ হায়দার, মোহাম্মদ রফিক,মাহবুব সাদিক,রফিক আজাদ,আবু কায়সার,সমুদ্র গুপ্ত,বুলবুল খান মাহবুব,জাহিদুল হক, রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, হূমাযুন আজাদ,আবিদ আজাদ,আবিদ আনোয়ার,মারুফ রায়হান,তপন বাগচী সহ অসংখ্য কবির কবিতায় প্রস্ফুটিত হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধ এবং চিরন্তন মানচিত্রের দীর্ঘচেতনা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কবি অ্যালেন গিন্সবার্গ এর কবিতা September on jessore road ১৯৭১ সালের নভেম্বরের ১৪ থেকে ১৬ তারিখের মধ্যবর্তী কোন এক সময় লিখিত। ধারণা করা হয়,গভীর চেতনাবোধ এবং মর্ম¯পর্শী ভাষায় লিখিত ১৫২ লাইনের এই কবিতাটিই এ যাবত লিখিত মুক্তিযুদ্ধের উপর দীর্ঘকবিতা। তৎকালীন বোম্বেতে অশোক সাহেইন ১৯৭১ সালের নভেম্বরে কবিতাটি পোস্টার আকারে প্রকাশ করেন। তৎকালীন সময়ে কবিতাটিতে নকশা করেন আর.কে. যোশী। অ্যালেন গিন্সবার্গ রচিত বিখ্যাত সেই কবিতাটির অংশবিশেষ নিম্নরূপ-

On the floor mat with a small emty pot

Father lifts up his hands at their lot

Tears come to their mothers eye

Pai makes mother Maya cry

( September on jessore road // Allen Ginsberg)

মুক্তিযুদ্ধের সময় লিখিত কবিতার বিশ্লেষণ কিংবা পর্যবেক্ষণ যতটুকু গুরুত্বপূর্ণ তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ কবিতার প্রেক্ষাপটে উঠে আসা সেই সময়ের বাস্তবিক মর্মান্তিক চিত্রকল্প।এ কারণেই অদ্যবধি  বাংলাদেশের যাবতীয় শ্রেণি-পেশার মানুষের বোধগুলোকে আজো তাড়িত করে এইসব কবিতার পঙক্তিমালা। সময়ের দাবীতে কখনো কখনো কোন কবিতা হয়ে ওঠে আসন্ন সংগ্রামের প্রচ্ছন্ন হাতিয়ার। কবিতার ভেতরে যেন অদ্ভুত আরেক দ্যোতকতায় বিদ্ধ হয় বোবা সময়ের কালো পাঁজর!-

লক্ষ্যবস্তু ভেদ করে উড়ে যায় সাদা কালো পাখি

ফসলের মাঠ সেও হয়ে ওঠে যুদ্ধের এলাকা

অনেক বছর পরে অস্ত্রহাতে পর্বত পেরিয়ে

একদিন মানুষেরা উঠে আসে শিল্পিত নগরে

ঢুলু ঢুলু চোখে তারা চেয়ে থাকে পৃথিবীর দিকে

তখন আকাশে ডুবিয়ে দ্রুত এক নাক্ষত্রিক রাত।

(ন্যায় যুদ্ধ // অসীম সাহা)

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ের কবিতায় তীব্রতর হয়েছে নস্টালজিক ভাবনায়,বহুমুখী ভঙ্গিমায়।কবিতার ভেতর কারুকাজ এর চেয়ে বেশি মুখ্য হয়ে উঠেছে একান্তের স্মৃতিচারণ। যার কারণে কবিতার ভাষিকচিন্তায়, নীরিক্ষায় সাবলীলতার ছায়া থাকলেও সত্যিকারের মুক্তিকামী চেতনার স্ফুটন ঘটেছে সেসব কবিতায়।বুলবুল খান মাহবুব মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনেই রচনা করেছিলেন কাব্যগ্রন্থ ‘জখমী সাথীকে নিয়ে আমরা দশজন’(প্রথম প্রকাশঃ১৯৭১,কল্লোল প্রকাশনী,সদর সড়ক,টাঙ্গাইল) মাহবুব সাদিক এর ‘যুদ্ধভাসান’ সিরিজের সবগুলো অংশই প্রমাণ করে বোধ আর চেতনার কাছে নতজানু সমস্ত সত্যভাষ্য।এই কবিতার প্রতিটি অংশই এবং চেতনাগত দিক থেকে প্রতিটি শব্দই এত বেশি ঋদ্ধ যে,বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ,ইতিহাস এবং সামগ্রিক গৌরবান্বিত চেতনার পরিস্ফুটন অশেষ নৈপুণ্যতার সাথে ফুটে উঠেছে-

শুধু তোমার জন্য, কুদ্দুসের গুলি খাওয়া

দীপ্ত কিশোর চোখে ঝলকায় স্থির জল, থির থির পলিমাটি

তার মনোভ‚মিবাসী কিশোরী প্রেমিকা

শুধু তোমার জন্য হে কিশোরী, হে স্বদেশ

দশমিনিটের শান্ত যুদ্ধে পার্বত্য ঝরনার মত কিশোরকুদ্দুস

দশ লাখ ফুট নিচে মিহিন মৃত্যুর কোলে আছড়ে পড়ল

শুধু তোমার জন্য হে কিশোরী, হে স্বদেশ

                                                 (যুদ্ধভাসান-৩ / মাহবুব সাদিক)

জাতিসত্তার চেতনাগত সর্বক্ষেত্রেই সময়ের দাবি প্রতিষ্ঠায় কবিতা অগ্রগণ্য ভ‚মিকা পালন করে।কেবল মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়কে ধারণ করাই সে সময় লিখিত কবিতাগুলোর প্রয়োজন ছিল না তার সাথে প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছিল সমগ্র বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের পরিস্থিতি অবহিত করা।বলা যায়,সে সময়ের স্মৃতিকে ধারণ করেই বেশিরভাগ কবিতা নির্মিত হয়েছে।ষাটের কবিরা তো বটেই সত্তর দশকের অনেক কবির কবিতায়ও কেবল স্মৃতিচারণই মুখ্য ছিল তবুও কারো কারো কবিতায় চলে এসেছিল বোধের তীব্র চিত্রায়ন।

বাংলাদেশের কবিতার এক অনন্য ভ‚স্বর্গ মুক্তিযুদ্ধের আখ্যান।এই চেতনাকে দৃঢ়ভাবে লালন করেই বাংলাদেশ তথা সমগ্র বিশ্বের কবিরা ব্যথিত হয়ে ছিলেন,যুঁথবদ্ধ হয়েছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপক্ষে এবং স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে কবিতা রচনায়।চৈনিক কথাসাহিত্যিক লু শুন এর মন্তব্যের সাথে একাত্বতা প্রকাশ করে বলা যায়,‘বিপ্লব হয় বন্দুক দিয়ে কবিতা দিয়ে নয়’।আবার বিপ্লবের অন্যতম হাতিয়ার কবিতা যার শ্রেষ্ঠ উদাহরণ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ।অস্ত্র হাতে নিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে যুদ্ধ করে সামরিক-বেসামরিক স্বর্বস্তরের মানুষ আর সেইসব মুক্তিকামী যোদ্ধাদের সাহস ও অনুপ্রেরণা যোগায় কবিতা। এ বিষয়টি আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার চেতনাকে আরো বেশি উজ্জীবিত করেছিলো।যে দেশ যুদ্ধ করে তার স্বাধীনতার জন্য আশ্চর্য হলেও সত্য যে, লিখিত হোক, অলিখিত হোক, সে দেশে যুদ্ধের সাহিত্যও তৈরি হয়ে ওঠে অবচেতন মনে। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের কবিতায়ও সেরকম প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে। এ দেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে রচিত কবিতাও তেমনি সাহিত্যে যা চিরঞ্জীব হয়ে উঠেছে সময়ের প্রয়োজনে,আত্মিক তাড়নায়।

মুক্তিযুদ্ধের ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ যেরকম বিন্ম্র শ্রদ্ধায় স্মরিত হয় বারবার তেমনি দুই লাখ নারীর সম্ভ্রমও স্মৃতির বেদীতে প্রতি মুহূর্তে হয়ে ওঠে অনির্বাণ। হাজারো হতাহত মানুষের গগনবিদারী চিৎকারের সাথেই জেগে থাকে অজ্ঞাতনামা বীরাঙ্গণাদের আজন্মিক হতাশ্বাস। হাসান হাফিজুর রহমান তাইতো লিখলেন এরকম পঙক্তিমালা। সেইসব বীরাঙ্গনাদের ঊর্ধ্বে তুলে ধরে তাঁর কবিতা আজও চেতনায় ভাস্বর-

তোমাদের ঘৃণার আগুন লেলিহান ¯পর্শ করে

আপন আকাশসীমা সব পাপ পোড়াবার

অপার পাবক হয়ে ওঠো রাতারাতি। সম্ভ্রমে নুইয়ে মাথা

স্তব্ধ চোখে দেখি হতবাক, এমন তো দেখিনি কখনো আগে!

জীবনের পবিত্রতা তুচ্ছ হয়ে গেছে তোমাদের কাছে।

লাঞ্ছনার বেদীমূলে তোমরা সবাই

একেকটি স্মৃতিচিহ্ন হয়ে গেছো আজ,

সংগ্রামের খর প্রাণকণা অনশ্বর বীরাঙ্গণা।

ভিটেমাটি ধন্য হবে,সেখানেই হেঁটে যাবে

পদপাতে আলপনা এঁকে এঁকে মুহূর্তে সজীব হবে দূষিত বাতাস।

                                                 (বীরঙ্গনা/ হাসান হাফিজুর রহমান)

যুদ্ধ কেবলই যুদ্ধ। রক্তের হোলিখেলার এই উপাখ্যান বাস্তবায়নের ভিতর দিয়ে বাংলাদেশের জন্মবেদনায় প্রাণসঞ্চারি ভ‚মিকা রেখেছিল এই দেশের সমগ্র সাহিত্য। একটি কথা সত্য এবং অনস্বীকার্য যে,বাংলাদেশ এবং পার্শ্ববর্তী ভারত ছাড়াও অনেক দেশের কবিরাই মুক্তিযুদ্ধের প্রতি প্রকাশ্য সমর্থন প্রকাশ করেন বাংলাদেশকে। বিশ্ববিখ্যাত পপশিল্পী জর্জ হ্যারিসন,মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কবি জোয়ান বায়েজ,লোরি এন ওয়ালস, টমাস এ্যনসেল, অস্ট্রেলিয়ার ফিলিপ ভয়েজি, পাকিস্তানের ফয়েজ আহমদ ফয়েজ,সৈয়দ আসিফ শাহাকার, আহমেদ সালিম, আহমদ ফরাজ, বসনিয়ার কবি ইভিৎসা পিসেস্কি,জাপানের মাৎসুও সুকুইয়া,নেপালি কবি বিবশ পোখরেল, বিষ্ণুপ্রিয়া ভাষার কবি ব্রজেন্দ্র কুমার সিংহ,নন্দেশ্বর সিংহ, জার্মানির কবি লুইপকে প্রমুখসহ অজ্ঞাতনামা অনেক কবিই তাদের কবিতায়

বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রতি মৌন এবং প্রকাশ্য সমর্থন জানিয়েছেন।

বাংলাদেশের কবিতার যে সুদীর্ঘ পথ ইতিহাস, ঐতিহ্যকে কেন্দ্র করে নির্মিত; মুক্তিযুদ্ধের কবিতার পায়ে তার সবটুকুই নতজানু হয়েছে বিনম্র শ্রদ্ধায়। কবিতার সরলরেখা কিছুমাত্র বক্রতা এ রূপান্তরিত হয়নি ১৯৭১ সালে,বরং আরো বেশি বেগবান হয়েছে,আবেগাপ্লুত চেতনায় উজ্জীবিত হয়েছে। যার অকাট্য দলিল এবং প্রমাণ হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী পঞ্চাম বছরের বাংলাদেশের কবিতায় অসা¤প্রদায়িক চেতনা এবং মুক্তিযুদ্ধোত্তর স্বপ্নের বহিঃপ্রকাশ। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শেষ হলেও তার ধ্বংসযজ্ঞ তান্ডবলীলা আর স্বজনহারাদের আহাজারি অদ্যবধি ভারী করে তোলে বাংলার বাতাস। সবকিছু খুব দ্রুতই স্মৃতি হয়ে গেলেও ‘হৃদয়’ নামক আগ্নেয়াস্ত্র জমা দেয়নি কেউ,কোন সর্বাধিনায়কের পায়ে। যদি কখনো যুদ্ধ হয় চেতনা প্রতিষ্ঠার জন্য…কিংবা যদি কোনদিন আবার  প্রণয় জরুরি হয়ে ওঠে মারণাস্ত্রের সাথে। নির্মলেন্দু গুণ এবং হেলাল হাফিজের নিম্নবর্ণিত কাব্যাংশ এই চেতনার সাথে কী অদ্ভুত মিশে যায়!-

আমি শুধু সামরিক আদেশ অমান্য করে হয়ে গেছি

কোমল বিদ্রোহী-প্রকাশ্যে ফিরছি ঘরে

অথচ আমার সঙ্গে

হৃদয়ের মতো মারাত্মক একটি আগ্নেয়াস্ত্র

                                                            আমি জমা দিইনি

(আগ্নেয়াস্ত্র/ নির্মলেন্দু গুণ)

তোমাকে আজ সেই আমি কারাগারে

সমর্পণ করে,ফিরে যাচ্ছি ঘরে

মানুষকে ভালবাসা ভালোবাসি বলে।

যদি কোন দিন আসে আবার দুর্দিন

যেদিন ফুরাবে প্রেম অথবা হবে না প্রেম মানুষে মানুষে,–

ভেঙে সেইকারাগার

আবারো প্রণয় হবে মারণাস্ত্র তোমার আমার।

                                                (অস্ত্র সমর্পণ/ হেলাল হাফিজ)

আমাদের স্বাধীনতা আর সার্বভৌমত্বের  প্রকাশ্য উদাহরণ মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এ যাবৎকাল অবধি নির্মাণ হচ্ছে অসংখ্য কবিতা,গান, নাটক আর উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র। এসবের ভিতরে কবিতায় যেভাবে মুক্তিযুদ্ধ বিমূর্তভাবে উঠে এসেছে বোধকরি সাহিত্যের অন্য কোনো মাধ্যমে এত গভীরভাবে উঠে আসেনি। মহান স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর অতিক্রান্ত হলেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে পাশ কাটিয়ে যাননি এদেশের কবিরা বরং আরো বেশি বেগবান হয়েছে তাদের রচনা,এটিই স্বাভাবিক। কেননা মুক্তিযুদ্ধ আমাদের যাপিত জীবনচেতনা আর জাতিসত্ত্বার এক অবিসংবাদিত মহীরূহ।বাংলাদেশের কবিদের পাশাপাশি চেতনা মিলিয়ে সমগ্র বিশ্বের অনেক কবিই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে তুলে এনেছেন তাদের কবিতায়।কবিতার ভাস্কর্যে আমাদের

মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে এ আমাদের পরম প্রাপ্তি এ কথা সাহস করে বলাই যায়।

কবিতা এক দীর্ঘ মঞ্চ বাঙালি সত্ত্বার উদ্যানে আর তার অন্যতম সংযোজন মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে রচিত কবিতাবলী। নতুন শতকের আধুনিকতা আর প্রাজন্মিক ভাবনার ধারাবাহিকতায়,যাপিত জীবনাচারে,একান্ত বোধ এবং সাহিত্য-সম্ভারে

এ এক অনবদ্য ভাবনার মহিমান্বিত কারুকাজ। চেতনার অনিঃশেষ ওঙ্কার ।

এমরান হাসান-কবি

Tags: এমরান হাসানকবিতাচাতালপ্রবন্ধমুক্তিযুদ্ধ
Previous Post

ক্যানভাসে স্বাধীনতা।। কামরুল হাসান

Next Post

১৯৭১: রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের প্রথম ওয়্যারলেস মেসেজ ।। সালেক খোকন

Chatal

Chatal

Next Post

১৯৭১: রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের প্রথম ওয়্যারলেস মেসেজ ।। সালেক খোকন

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • About
  • Advertise
  • Privacy & Policy
  • Contact
বাংলামটর, ঢাকা-১০০০, বাংলাদেশ।
ই-মেইল: [email protected]

© 2021 Chatalbd - Design & Developed By Developer Rejwan.

No Result
View All Result
  • হোম
  • পরিচিতি
  • প্রবন্ধ
  • কবিতা
  • গল্প
  • সাক্ষাৎকার
  • বই আলোচনা
  • আলোকচিত্র
  • প্রতিবেদন
  • অনুবাদ সাহিত্য
  • বিশেষ আয়োজন
  • বিবিধ
  • কবি-লেখকবৃন্দ

© 2021 Chatalbd - Design & Developed By Developer Rejwan.

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In