Friday, May 9, 2025
  • Login
  • হোম
  • পরিচিতি
  • প্রবন্ধ
  • কবিতা
  • গল্প
  • সাক্ষাৎকার
  • বই আলোচনা
  • আলোকচিত্র
  • প্রতিবেদন
  • অনুবাদ সাহিত্য
  • বিশেষ আয়োজন
  • বিবিধ
  • কবি-লেখকবৃন্দ
No Result
View All Result
  • হোম
  • পরিচিতি
  • প্রবন্ধ
  • কবিতা
  • গল্প
  • সাক্ষাৎকার
  • বই আলোচনা
  • আলোকচিত্র
  • প্রতিবেদন
  • অনুবাদ সাহিত্য
  • বিশেষ আয়োজন
  • বিবিধ
  • কবি-লেখকবৃন্দ
No Result
View All Result
No Result
View All Result
Home বিশেষ আয়োজন ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস

বেয়নেট।। হেমন্ত হাসান

Chatal by Chatal
June 1, 2021
in ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস, বিশেষ আয়োজন
A A
0

১৯৭১ সালের কার্তিক মাসের এক রাতে অর্জুনা গ্রামের কৃষিজীবি পরিবারের মানুষগুলো যখন রাতের খাবার শেষ করে শোবার প্রস্তুতি নিচ্ছে- ঠিক সেই সময়ে পাকিস্তান আর্মির সৈন্য বোঝাই পাঁচটা গাড়িও অর্জুনা গ্রামের দিকে রওনা দেবার প্রস্তুতি নিচ্ছিল।

অর্জুনা গ্রামের আর দশজন মানুষের মত কেতাব আলীও পেশায় একজন কৃষক। বাড়ি আর বাড়ির পাশের পালানটুকু ছাড়া তার আর নিজের কোন জমি নেই। সারা বছর ক্লায়-কেশে তার সংসার চলে কিছু বর্গা জমি চাষ করে। বর্ষার মৌসুমে কেতাব আলীর ছনের চাল দিয়ে বৃষ্টির পানি পরে অবিরাম। তবু তার ঘরের সুখ কখনও ভেসে যায় না কোন দুঃখের স্রোতে। বৃদ্ধা মা, মায়াবতী স্ত্রী এবং তের বছরের কিশোরী কন্যা রানুকে নিয়ে তার সুখের সংসার। গ্রামের অন্য সব বাড়ির কর্তারা যখন রাতে খেয়ে দেয়ে, এক টুকরো পান মুখে দিয়ে টুপ করে শুয়ে পরে, কেতাব আলী তখন পান চিবুতে চিবুতে মেয়েকে গল্প শোনায়।  কেতাব আলীর খুব আদুরে মেয়ে রানু। মেয়ে এত বড় হয়েছে তবু প্রতি রাতেই ঘুমুতে যাবার আগে সে বাবার কাছে গল্প শোনার বায়না ধরে। আর কেতাব আলীও একটি রাতের জন্য মেয়েকে নিরাশ করেন না। রাজা-রাণীর গল্প, ভয়ংকর রাক্ষস কিংবা দ্যাও দানবের গল্প, মেছো ভূত অথবা শাকচুন্নির গল্প, কেতাব আলীর নিজের জীবনের গল্প- সবকিছুরই  মুগ্ধ শ্রোতা রানু।

একদিন রাতের খাবার শেষ করে সবাইকে নিয়ে বসে আছে কেতাব আলী। তার মেয়ে

রানু বলল, ‘বাজান, একটা হাস্তর কইন না!’

‘কী হাস্তর কমুরে মা? যেডি হাস্তর হিকছিলাম এই জীবনে, কোনডা কওন আর বাকী নাই তরে।’

‘ তাও কইন একটা। পুরান দেইখাই কইন।’

কেতাব আলীর মা রানুকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘ ঐ ছেরি, তুই এত হাস্তর হাস্তর করস ক্যা?’

‘ তাতে তোমার এত জ্বলে ক্যান বুড়ি?’

‘আরে হোন, যে হুনে হাস্তর তার গোয়ায় থাকেনা বস্তর! ‘ কথাটি বলেই কুল কুল করে হাসতে থাকে কেতাব আলীর বৃদ্ধা মা। রানুও হাসতে হাসতে ভেঙে পরে। স্ত্রীর সাজিয়ে  দেয়া পান মুখে দিতে দিতে কেতাব আলীর বুকটা সুখে ভরে ওঠে। মনে মনে সে মেয়েকে আজ কী গল্প শোনাবে তার প্রস্তুতি নেয়।

পরের দিন খেয়ে দেয়ে উঠানে কাঁঠাল গাছটার নিচে টুল পেতে বসে ছিল কেতাব আলী।

দুপুরে খাবার পর শরীর ভাড়ি হয়ে ওঠে এমনিতেই। শরীর এলিয়ে পরতে চায় বিছানায়। তার উপর এমন রৌদ্রের দুপুর, এমন দুপুরের বাতাস! ঝিমুনি এসে যাচ্ছিল তার।কিন্তু ঝিমুলে চলবে না । দুপুর গড়িয়ে এলে তাই সে উঠে দাঁড়ায়। দুই হাত আকাশের দিকে তুলে আড়মোড়া ভাঙে। ঘরে ঢুকে পাঞ্জাবিটা গায়ে চড়াতে চড়াতে বের হয়ে আসে। কেতাব আলী দেখে, রানু বাড়ির সীমানায় একটা সুপারি গাছ ধরে পালানের জমির দিকে মুখ ফিরিয়ে চুপচাপ দাড়িয়ে আছে। বাতাসে তার কয়েকটা চুল উড়ছে। জন্ম থেকেই অন্ধ রানুর কাজলটানা চোখ দুটো এত সুন্দর! অথচ তাতে কোন আলো নেই। তার তাকিয়ে থাকা দেখে কেউ বলবে না – ঐ চোখ দৃষ্টিহীন। মেয়ের এভাবে দাঁড়িয়ে থাকা, দাঁড়িয়ে থেকে এভাবে তাকিয়ে থাকা দেখে কেতাব আলীর বুকটা হু হু করে ওঠে। সে ধীর পায়ে মেয়ের দিকে এগিয়ে যায়।

কী করস মা?- কেতাব আলী মেয়ের মাথায় হাত রাখে।

‘কিছুনা বাজান।’

‘চুপচাপ খাড়ায়া আছস যে?’

‘ হ। বাতাস খাই। কী সুন্দর বাতাস আহে এনু!’

‘ হাটে যাই। তর জন্যে কী সদাই আনমু মা?’

‘ সনপাপড়ি। ‘- বলেই মেয়েটা হেসে ফেলে। সেই হাসিতে কী মায়া! কেতাব আলী মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়েই থাকে।

হাটে গিয়ে সনপাপড়ি কেনা হয়না কেতাব আলীর। সে বেজায় অবাক হয়। আজ হাট বার অথচ হাটের অর্ধেক দোকানই বন্ধ। হাটে হাতেগোনা মানুষ। সে আধাসের খোলা নুন কিনতে কিনতে দোকানিকে জিজ্ঞেস করে- আইজ হাট এ্যাবা ক্যা?

দোকানি দাড়িপাল্লায় লবণ মাপতে মাপতে জবাব দেয়- ‘ ক্যা হুনুইন নাই কিছু?’

‘ কী হুনমু? কিয়ের কতা কইন? ‘ কেতাব আলী অবাক হয় যেন।

‘ হাটের পিছনে ইস্কুল ফিল্টে কাইল রাইতে মিলিটারি ক্যাম করছে।’

‘মিলিটারি!! ‘ কেতাব আলীর বুকটা ঝাৎ করে ওঠে একেবারে!

‘ হ, পাকিস্তানি মিলিটারি।’ দোকানি নুনের পোটলাটা হাত বাড়িয়ে দেয়।

দেশে এখন নাকি যুদ্ধ চলছে। পাকিস্তানি মিলিটারিরা ঢাকায় শেখ মুজিবের লোকদের গুলি করে মারছে। শহরের অনেক লোকজন গ্রামে তাদের আত্মীয়ের বাড়িতে চলে এসেছে। আবার ফিরেও তো গেছে অনেকে। কিন্তু, এই গ্রামে মিলিটারি কী চায়? এখানকার সব মানুষ নিরীহ, শান্তি প্রিয়। তারা কাজ করে- খায়। রাজনীতি বুঝেনা তারা। তাদের কাছে কেন মানুষ মারা মিলিটারি আসবে?

হঠাৎ গুলির শব্দে কেতাব আলীর ভাবনায় ছেদ পরে । হাটের বাইরে পর পর তিন চার বার গুলির শব্দে পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। সমস্ত খদ্দের পরিমরি করে ছুট দেয়।  দোকানিরা ঝুপঝাপ দোকান গুটিয়ে নেয়। কেতাব আলীর পরান কাঁপে। ভয়ে সবার সাথে সাথে সে-ও দৌড়ায়। দৌড়াতে দৌড়াতে সে ভুল পথে চলে আসে। তখন আবার গুলির শব্দ শোনা যায়।

দিনের আলো শেষ হয়ে আসছে। কেতাব আলী লুকিয়ে আছে রাস্তার পাশে একটা কাঁটা ঝোপের ভেতর। ভয়ে আতঙ্কে সে জড় হয়ে গেছে যেন।কপাল খারাপ হলে যা হয়। মিলিটারির ভয়ে সে তিন রাস্তার এই মোড়ের নিচে ঝোপের ভেতর সে লুকিয়ে ছিল। এখন সেই মিলিটারির কারণেই এই ভর সন্ধ্যাবেলাতেও সে বের হতে পারছে না।মশার কামড়ে তার শরীর জ্বলে যাচ্ছে। তার সামনে রাস্তার উপর  পাকিস্তানি মিলিটারির একটি জিপ দাঁড়িয়ে আছে। জিপের সামনে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে সিগারেট টানছে মিলিটারির  এক অফিসার। রাস্তার ঐ পাড়ের একটি গ্রামের প্রায় সব কটা বাড়িতে জ্বলছে পাহাড় সমান আগুন। মানুষের চিৎকার – আর্তনাদে আতঙ্কিত হয়ে গাছের পাখিগুলোও উড়ছে এলোমেলো আকাশে। কেতাব আলী চার জন  মিলিটারিকে  দু’জন লোককে ধরে নিয়ে আসতে দেখে। সৈন্যগুলো অফিসারকে স্যালুট করে। তাদের মধ্যে কী যেন কী কথা বিনিময় হয়। ।কেতাব আলী সেসব শুনতে পায়না। সে দেখতে পায়, দু’জন লোকের মধ্যে একজন কম বয়েসী, অন্যজন সাদা লম্বা দাড়িমুখের বয়স্ক মানুষ। হঠাৎ একজন সৈন্য দাড়িওয়ালা লোকটির গালে কষে এক চড় বসিয়ে দেয়। হতভম্ব কেতাব আলী দেখে হঠাৎ কম বয়েসী লোকটাকে সৈন্যরা মাটিতে ফেলে দেয়। তারা তার গলা বুট দিয়ে মাটিতে চেপে ধরে। তারপর বন্দুকের বেয়নেট বের করে অসঙ্কোচে ঢুকিয়ে দেয় মানুষটার চোখের ভেতর। আতঙ্কে কেতাব আলী চোখ বন্ধ করে ফেলে।  সেই অবস্থায় অর্জুনার আকাশ কাঁপিয়ে ঝলসে ওঠে পাকিস্তানি স্টেনগান।

বাড়িতে এসে কেতাব আলী উত্তেজনায় কথা বলতে পারেনা। ঘরে ঢুকে সে জগে রাখা পুরো পানি ঢেলে দেয় গলায়। তারপর আস্তে আস্তে হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক হয়ে এলে তিনজন অবাক শ্রোতার কাছে তার দেখা ঘটনার বর্ণনা দেয়। মায়ের দিকে তাকিয়ে সে বলে, ‘বেনট দিয়া যহন ব্যাডার চোখটা গলায়া দিল, মাগো কইয়া কি যে চিক্কর…!’

‘বেনট কী বাজান?’- রানু প্রশ্ন করে।

‘বেনট মনে কর একটা চাক্কু। বন্দুকের আগায় থাকে। শক্ত, নম্বা, চনচনা ধার!’

‘কি কও বাজান!’

‘হ রে মা।’

‘তারা গুলি দিয়া মারে আবার বেনট দিয়াও মারে!’ রানু বিরবির করে। কেতাব আলীর মা সূরা পড়ে ছেলের মাথায় ফু দেয়। রানুর মা হাতপাখায় বাতাস করতে থাকে অনবরত। তবু বুকের ধড়ফড়ানি কমে না তার।

পরেরদিন রাতে রানুরা সবাই ঘুমিয়ে ছিল গভীর। হঠাৎ দরজায় লাথি পরে। খুব দ্রুতই ঘুম ভেঙে যায় সবার। তারা এক সাথে উঠে বসে। কেউ কোন কথা বলতে ভুলে যায়।  কেউ বলে না দিলেও যেন সবার জানা হয়ে যায়, কে বা কারা আছে দরজার ওপাশে।

ভয়ে ভেঙে যাওয়া গলায় রানু হঠাৎ

বলে ওঠে, ‘বাজান…!’

‘চুপ….চুপ! কথা কইস না মা!’

কেতাব আলী ফিসফিস করে।

দমবন্ধ সময় কেটে যায় কিছুক্ষণ।এরপর লাথির আঘাতে দরজা ভেঙে যায়। টর্চের উজ্জ্বল আলো ঘুরে ঘুরে আসে সবার মুখের উপর।

 কেতাব আলীর মা ‘ক্যারা? ক্যারা?’ বলে চেঁচিয়ে ওঠে। উত্তরে কোন মানুষ কথা বলেনা। জবাব আসে বন্দুক থেকে। কেতাব আলী, তার স্ত্রী এবং মায়ের বুকের রক্ত একই স্রোত হয়ে বইতে থাকে ঘরের মেঝেতে। অন্ধ রানু কিছুই দেখতে পায়না। যেন সে বুঝতেও পারেনা কিছু। কী হচ্ছে আসলে?

রানু তার বাবাকে ডাকে, মাকে ডাকে, দাদীকে ডাকে। কেও সাড়া দেয়না। তাদের কেউ তার কাছেও আসে না। কাছে আসে অন্য কেউ। যে আসে সে সোজা এসে রানুকে জাপটে ধরে। তাকে নিয়ে বিছানায় গড়িয়ে পরে যায়। লোকটার গায়ে বাবার গল্পের রাক্ষসের মত জোর। তাই হাজার চেষ্টাতেও সে তার কাছ থেকে ছুটতে পারেনা। রানু বুঝতে পারে, লোকটি তার গায়ের জামা টেনে ছিঁড়ে ফেলছে। তার পাজামা খুলে ফেলছে।  রানু চিৎকার করে, বকা দেয়, কাঁদে। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে রানু তার তলপেটের নিচে প্রচন্ড যন্ত্রণা অনুভব করে। কষ্টে সে বাজান গো বলে বিকট চিৎকারে কাঁপিয়ে দেয় রাতের আকাশ।

তবু বাবা আসেনা।

কেউ আসেনা।

রানুর শরীরের নিম্নাংশে কষ্টের তীব্রতা বাড়তে থাকে ক্রমশ। পিপাসায় তার বুক শুকিয়ে আসে। সে অনুভব করে তার নিম্নাংশের শরীর ছিঁড়ে-ফুঁড়ে কিছু একটা ঢুকছে। সে জানেনা সেটা কী? সে শুধু জানে এ যন্ত্রণা মৃত্যুর মত। ধারালো ছুরির মত এ কোন ভয়ানক যন্ত্রণা তার ভেতরে প্রবেশ করছে তা ভাবতে ভাবতে সে জ্ঞান হারায়।

রানুর যখন জ্ঞান ফেরে তখনও অনেক রাত। চারদিকে শুনশান নীরবতা। তার কিছুই মনে পরছে না। কারও নাম মনে পরে না। সে বেঁচে আছে না মরে গেছে তাও বুঝতে পারেনা। অনেক চেষ্টায় রাতের অন্ধকারে তিনটি লাশের সাথে নিথর হয়ে পরে থাকা রানুর মৃতপ্রায় চেতনায় জেগে ওঠে শুধু একটি মাত্র নাম, একটি মাত্র যন্ত্রণা- বেয়নেট!

হেমন্ত হাসান– জন্মস্থান টাঙ্গাইল। বর্তমানে তিনি একটি প্রাইভেট ব্যাংকে কর্মরত আছেন।
Tags: গল্পচাতালহেমন্ত হাসান
Previous Post

প্রতিবেদন ।। মুক্তিযুদ্ধে কুষ্টিয়া পুলিশ লাইন্স।। ইমাম মেহেদী

Next Post

ক্যানভাসে স্বাধীনতা।। কামরুল হাসান

Chatal

Chatal

Next Post

ক্যানভাসে স্বাধীনতা।। কামরুল হাসান

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • About
  • Advertise
  • Privacy & Policy
  • Contact
বাংলামটর, ঢাকা-১০০০, বাংলাদেশ।
ই-মেইল: [email protected]

© 2021 Chatalbd - Design & Developed By Developer Rejwan.

No Result
View All Result
  • হোম
  • পরিচিতি
  • প্রবন্ধ
  • কবিতা
  • গল্প
  • সাক্ষাৎকার
  • বই আলোচনা
  • আলোকচিত্র
  • প্রতিবেদন
  • অনুবাদ সাহিত্য
  • বিশেষ আয়োজন
  • বিবিধ
  • কবি-লেখকবৃন্দ

© 2021 Chatalbd - Design & Developed By Developer Rejwan.

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In