Friday, May 9, 2025
  • Login
  • হোম
  • পরিচিতি
  • প্রবন্ধ
  • কবিতা
  • গল্প
  • সাক্ষাৎকার
  • বই আলোচনা
  • আলোকচিত্র
  • প্রতিবেদন
  • অনুবাদ সাহিত্য
  • বিশেষ আয়োজন
  • বিবিধ
  • কবি-লেখকবৃন্দ
No Result
View All Result
  • হোম
  • পরিচিতি
  • প্রবন্ধ
  • কবিতা
  • গল্প
  • সাক্ষাৎকার
  • বই আলোচনা
  • আলোকচিত্র
  • প্রতিবেদন
  • অনুবাদ সাহিত্য
  • বিশেষ আয়োজন
  • বিবিধ
  • কবি-লেখকবৃন্দ
No Result
View All Result
No Result
View All Result
Home প্রবন্ধ

প্রবন্ধ।। অসাম্প্রদায়িক চেতনা বাস্তবায়নে সংস্কৃতিকর্মীদের দায়।। স্বপন পাল

Chatal by Chatal
May 31, 2021
in প্রবন্ধ
A A
0

গতবছর এই সময়ে সারাবিশ্বে যখন সাম্প্রদায়িকতা-ধর্মান্ধতা নিয়ে একধরণের উন্মাদনা চলছিল (এখন কমেছে, এমনটা বলা যাবে না), তখন ইউটিউবে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো থেকে যে কয়টি গান সবচেয়ে বেশি খোঁজা হচ্ছিল, এর মধ্যে অন্যতম হলো ‘তু হিন্দু বনেগা, না মুসলমান বনেগা; ইনসান কী আওলাদ হ্যায় ইনসান বনেগা।’তুই না হিন্দু হবি, না মুসলমান হবি; মানুষের সন্তান তুই, মানুষই হবি-বাংলা করলে এমনটাই হয়। এন দত্তের সুর আর সাহির লুধিয়ানভির লেখা এই গানটি গত ৬০ বছর ধরে জনপ্রিয়তার শীর্ষে। হিন্দী ‘ধুল কা ফুল’ ছবির এই গানটির শিল্পী মোহাম্মদ রফি। সময় গড়িয়েছে অনেক; কিন্তু ‘ধুল কা ফুল’ ছবির গান ‘তু হিন্দু বনেগা, না মুসলমান বনেগা; ইনসান কী আওলাদ হ্যায় ইনসান বনেগা’ আজও প্রাসঙ্গিক বা অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি প্রাসঙ্গিক।

জানা যায়, ৫২-৫৩ সালের দিকে ভারতে সা¤প্রদায়িক দাঙ্গার একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সে সময় কিংবদন্তী শিল্পী মোহাম্মদ রফি এই গানটি নিয়ে বোম্বের রাস্তায় নেমে এসেছিলেন। সাথে ছিলেন দিলীপ কুমার, নিম্মীসহ বলিউডের তৎকালীন প্রখ্যাত অভিনেতা-অভিনেত্রীগণ। থেমে গিয়েছিল সমস্ত সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা।

ভারতে এন আর সি (নাগরকিত্ব বিল) নিয়ে যখন খুব উত্তেজনা চলছিল, পশ্চিমঙ্গের রাজধানী কলকাতায় একটি পোস্টার খুব নজর কেড়েছিল মানুষের। পোস্টারটির ভাষ্য এমন ‘তোমাদের আছে নাথুরাম, আমাদের আছে ক্ষুদিরাম’। নাথুরাম ঘৃণিত হয়ে আছে অসাম্প্রদায়িক মহাত্মা গান্ধীকে হত্যা করার জন্যে, আর ক্ষুদিরাম বৃটিশ বিরোধী সংগ্রামে নিজের প্রাণ বিসর্জন দিয়ে আমাদের চেতনায় জ্বলজ্বল করছে আজো। কিন্তু ভারতের সাম্প্রদায়িক দল বিজেপি নাথুরামকেই নায়ক বানাতে চাচ্ছে। এই পোস্টারটি যিনি করেছেন, তিনি অবশ্যই একজন সংস্কৃতিকর্মী।

যদিও ব্যাপক অর্থে মানুষের সম্যক কৃতিই সংস্কৃতি। হ্যাঁ, দুস্কৃতি কখনোই সংস্কৃতির অংশ নয়। তাই বলা যায়, যে সব কৃতি মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যায়, তা-ই সংস্কৃতি।

সংস্কৃতি নিয়ে আজকের বিষয়ে যাওয়ার আগে সমাজ-চিন্তক যতীন সরকার কি বলেন- তা একটু দেখে নিতে পারি। তিনি বলেন, ‘মানুষ তার যে-সব কৃতির মধ্য দিয়ে প্রতিনিয়ত তার পরিপার্শ্বকে বদলাতে থাকে, এবং এরকম করে তার নিজেরও বদল ঘটিয়ে চলে-অর্থাৎ যে-সব মানবিক কৃতি প্রকৃতি ও মানুষ উভয়কেই সংস্কৃত করে-সে-সবই সংস্কৃতি। সংস্কৃতিই গুহাবাসী মানুষকে প্রাসাদবাসী করেছে, জলে-স্থলে-অন্তরীক্ষে মানুষের আধিপত্যের নিস্তার ঘটিয়েছে। মানুষের প্রকৃতিবিজয় আর মানবসমাজের বিকাশ হাত ধরাধরি করে চলছে যে-প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে, সেই পুরো প্রক্রিয়াটিই সংস্কৃতি। সেই প্রক্রিয়া বস্তুর সংস্কার ঘটিয়ে হয়েছে বস্তুগত সংস্কৃতি, আর মানবীয় আবেগ-অনুভ‚তিকে অবলম্বন করে তার সংস্কার সাধন করে জন্ম নিয়েছে আত্মিক তথা মানস বা ভাবগত সংস্কৃতি। অর্থাৎ সংস্কৃতি কেবল বিমূর্ত ভাবের বা অনুভূতির বিষয় নয়, প্রমূর্ত বাস্তবও তার অন্তর্ভুক্ত।’

মানব সমাজে নানা সম্প্রদায় বিদ্যমান। সেটা কখনো ধর্মীয়, কখনো পেশাগত, কখনো গোষ্ঠীগত।  এই সব সম্প্রদায়ের আবার নিজস্ব চিন্তা-চেতনা আছে। থাকাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেটি যতক্ষণ না অন্যের জন্যে ক্ষতির কারণ হয়ে উঠছে, ততক্ষণ সেটিকে সাম্প্রদায়িকতার দোষে দুষ্ট বলা যাবে না।

স্বাধীনতার পরে পাকিস্তানের কারাগার থেকে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি ঢাকায় এসেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিশাল জনসভায় বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমি স্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়ে দিচ্ছি,  আমাদের দেশ গণতান্ত্রিক,  ধর্মনিরপেক্ষ, জাতীয়তাবাদী এবং সমাজতান্ত্রিক দেশ।’ তিনি দৃঢ়কণ্ঠে এ-ও বলেছিলেন,  ‘দেশে সাম্প্রদায়িকতার স্থান নেই’।

বাংলাদেশের সংবিধানের ১২ নং অনুচ্ছেদে পরিস্কারভাবে বলা হয়েছে, ‘ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি বাস্তবায়নের জন্য (ক) সর্বপ্রকার সাম্প্রদায়িকতা (খ) রাষ্ট্র কর্তৃক কোনো ধর্মকে মর্যাদা দান (গ) রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মের অপব্যবহার (ঘ) কোনো বিশেষ ধর্ম পালনকারী ব্যক্তির প্রতি বৈষম্য বা তার উপর নিপীড়ন বিলোপ করা হইবে।’

১৯৫৬ সালে যুক্ত নির্বাচন বিল পাশের সময় বঙ্গবন্ধু ধর্মের অপব্যবহারে কথা বলতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘ধর্মের নামে যুগে যুগে মানুষকে ধোঁকা দেওয়া হয়েছে।’

১৯৭৪ সালের ১৮ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে বলেছিলেন, ‘রাজনীতিতে যারা সাম্প্রদায়িকতার সৃষ্টি করে তারা সাম্প্রদায়িক, তারা হীন, নীচ, তাদের অন্তর ছোট। যে মানুষকে ভালোবাসে, সে কোনদিন সাম্প্রদায়িক হতে পারে না।’

আমার এক বন্ধুর বাবা প্রায়শই বলতেন, ‘আমরা যারা বাঙালি বলে দাবি করি, আসলে কেউই প্রকৃত বাঙালি হয়ে উঠতে পারিনি, কেউ মুসলমান বাঙালি, কেউ হিন্দু বাঙালি, আবার কেউবা বাঙালি মুসলমান বা বাঙালি হিন্দু।’

মুক্তিযুদ্ধের পর স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করে ’৭২-এর ১০ জানুয়ারি রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) সর্বকালের সর্ববৃহৎ ঐতিহাসিক গণমহাসমুদ্রে বঙ্গবন্ধু অশ্রুসিক্ত নয়নে উচ্চকিত হয়েছিলেন এই বলে যে, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন ‘সাত কোটি সন্তানেরে হে মুগ্ধ জননী, রেখেছ বাঙালি করে মানুষ করনি।’ কবিগুরু, তুমি এসে দেখে যাও, আমার বাঙালি আজ মানুষ হয়েছে, তুমি ভুল প্রমাণিত হয়েছে, তোমার কথা আজ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে…।’ হ্যাঁ, সত্যিই আমরা সেদিন মানুষ হয়ে উঠেছিলাম। উচ্চকন্ঠে গেয়েছিলাম ‘জয় বাংলা বাংলার জয়।’ তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা মেঘনা যমুনা।’

‘বাংলার হিন্দু, বাংলার বৌদ্ধ,

বাংলার খ্রীষ্টান, বাংলার মুসলমান,

আমরা সবাই বাঙালী ।’

কিন্তু ৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর আমরা কি আর মানুষ থাকতে পেরেছি? মানুষ থেকে অনেক দূরে সরে এসেছিলাম বলেই আমরা জাতির জনককে সপরিবারে হত্যা করতে পেরেছিলাম। পেরেছিলাম জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে খুন করতে। নির্মম নিষ্ঠুরতার ছুরি চালাতে পেরেছিলাম অসাম্প্রদায়িক সংবিধানে, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের বুকে। এরপর কেবলই পিছিয়ে আসা। ক্রমাগত আবার ধর্মীয় পরিচয়কেই প্রধান পরিচয় হিসেবে সামনে নিয়ে আসা। কিন্তু সেটার ফল কি হতে পারে একশ বছরেরও বেশি সময় আগে রবীন্দ্রনাথ বলে গেছেন। ১৯০৫ এর বঙ্গভঙ্গ এবং ১৯১১ এর বঙ্গভঙ্গ রদের পর ১৯১৩ সালে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন,

‘যে-দেশে প্রধানত ধর্মের মিলেই মানুষকে মেলায়, অন্য কোনো বাঁধনে তাকে বাঁধতে পারে না, সে-দেশ হতভাগ্য। সে-দেশ স্বয়ং ধর্মকে দিয়ে যে-বিভেদ সৃষ্টি করে সেইটে সকলের চেয়ে সর্বনেশে বিভেদ। মানুষ বলেই মানুষের যে মূল্য সেইটেকেই সহজ প্রীতির সঙ্গে স্বীকার করাই প্রকৃত ধর্মবুদ্ধি। যে-দেশে ধর্মই সেই বুদ্ধিকে পীড়িত করে রাষ্ট্রিক স্বার্থবুদ্ধি কি সে-দেশকে বাঁচাতে পারে।’

আমরা কি টের পাচ্ছি না কিছু!

সেই পঁচাত্তর থেকেই কিন্তু সাহিত্য-সংস্কৃতি জগতের মানুষেরা বসে থাকেনি। যখন বঙ্গবন্ধুর নাম নেওয়া যেত না, সেই সময় নির্মলেন্দু গুণ কিন্তু ঠিকই নিয়ে আসলেন বঙ্গবন্ধুর কথা, ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণকে উপজীব্য করে লিখলেন ‘স্বাধীনতা, এই শব্দটি কিভাবে আমাদের হলো’। এ সম্পর্কে নির্মলেন্দু গুণ বলেন, ‘১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর ইতিহাসবিকৃত হওয়া শুরু হয়।…. তখন আগামী প্রজন্মের কাছে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার জন্য কবিতাটি লেখার তাগিদ অনুভব করি।’ ‘ইতিহাস কথা কও’ রচনা ও পরিবেশনার মাধ্যমে আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্যের কথা তুলে ধরে উদীচী। ১৯৭৬-এর ১৬ ডিসেম্বর উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী মঞ্চায়ন করে আমাদের জাতিসত্তার মুক্তির আন্দোলনের ইতিহাস-সংবলিত গীতি আলেখ্য ‘ইতিহাস কথা কও’। সাম্প্রতিক সময়ে মানবতাবিরোধীদের সর্ব্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে গড়ে উঠা গণজাগরণ মঞ্চ আমাদের জন্য বড় আশার আলো। এমন উদাহরণ আরো দেওয়া যাবে।

ইউরোপে রেনেসাঁসের ফলে গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরিবর্তন হয়েছিল। এর আগে যেমন ছিল সবকিছু ঈশ্বর কেন্দ্রিক, রেনেসাঁসের পর সেখানে তা হলো মানুষ কেন্দ্রিক। বলা হলো ঈশ্বর আছেন, থাকবেন তাঁর জায়গাতেই। কিন্তু ইহজগতে মানুষই প্রধান। আমাদের এখানে কিন্তু এমন ভাবনা অনেক আগে থেকেই আছে। বাংলার মধ্যযুগের কবি চন্ডীদাস উচ্চারণ করেছিলেন মানব-ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ মানবিক বাণী। ‘সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই’। নজরুল বলেছেন,‘মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহিয়ান।’ আমাদের রশীদ উদ্দীন বলেছেন, ‘মানুষ ধর মানুষ ভজ’ কিংবা সাধক কবি জালাল উদ্দিন খাঁ বলেছেন, ‘মানুষ থুইয়া খোদা ভজ/ এই মন্ত্রণা কে দিয়াছে/ মানুষ ভজ কোরান খোঁজ/ পাতায় পাতায় সাক্ষী আছে।’  লালন সাই বলেন, ‘সুন্নত দিলে হয় মুসলমান/ নারী জাতির কি হয় বিধান/ ব্রাহ্মণ চিনি পৈতে প্রমাণ/ বামনি চিনি কি করে/ সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে/ লালন বলে জাতের কি রূপ/ দেখলাম না এই নজরে …।’

‘নানান বরন গাভীরে ভাই/ একই বরণ দুধ/ জগৎ ভরমিয়া দেখলাম/ একই মায়ের পুত-’ এ তো বাংলার লোক কবিরই কথা।

এমনসব আলোর উৎস আমাদের আরো অনেক আছে। এরপরও একটা অপশক্তি এই অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িক বানানোর হীন চক্রান্তে লিপ্ত। পাকিস্তান তো ঘোষিতভাবেই সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র। ভারতের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা থাকলেও সেখানে সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতি শেকড় গড়ে বসেছে। ক্ষমতায় আছে সাম্প্রদায়িক দল বিজেপি। আমাদের সংবিধানেও ধর্মনিরপেক্ষতার পাশাপাশি রাষ্ট্রধর্ম রয়ে গিয়েছে। এই সবকিছুর পিছনে আছে রাজনীতি। রাজনীতির মূল বিষয় ক্ষমতা আর ক্ষমতার জন্যে ধর্মকে যখনই ব্যবহার করা হয়, তখনই জন্ম নেয় সাম্প্রদায়িকতা। তাই এটা মনে রাখা জরুরী যে, সাম্প্রদায়িকতা ধর্মের নামে হলেও বিষয়টি ধর্মের নয়, এটি রাজনীতির ব্যাপার। সাম্প্রদায়িতায় ধর্ম চলে যায় রাজনীতি কব্জায়। আমাদের উপমহাদেশের ইতিহাসের দিকে চোখ ফেরালেই এটা ভালো করে উপলব্ধি করতে পারবো আমরা।

মানুষকে না হলে মানুষের চলে না। সমাজের মধ্যে না থাকলে মানুষ বাঁচতে পারে না। আবার এই মানূষই একে অপরকে দূরে ঠেলে দেয় কখনো জাতি, কখনো গোষ্ঠী কখনোবা ধর্মীয় বিষয়কে কেন্দ্র করে। এটিই রূপ নেয় সাম্প্রদায়িকতায়। এবং এর মধ্যে দিয়ে যে সমাজ মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে, সেই সমাজকেই অবিন্যস্ত করে ফেলে এই মানুষই, সমাজের মধ্যে স্বার্থের বিষ ঢুকিয়ে দিয়ে সমাজকে তো মারেই, নিজেও মরে। দোষগুণ নিয়েই মানূষ। তাই মানুষকে গ্রহণ করতে হয় সমগ্ররূপে। দোষমুক্ত হতে তাকে সহযোগিতা করার পাশাপাশি তার গুণকে সম্প্রসারিত করতে হাত বাড়িয়ে দিতে হয় মানুষকেই। এইভাবেই একজন মানুষকে তার সুস্থ স্বাভাবিক এবং স্বচ্ছ জীবনবোধের জন্য একা থাকতে পারে না, থাকতে হয় সমাজবদ্ধ হয়ে। সুস্থ জীবনরসের পিপাসাই মানুষকে অমৃতের সন্ধান দিতে পারে। এই সন্ধান আছে কর্মে, জিজ্ঞাসায়, দর্শনে, শিল্পে-সাহিত্যে। আর এই সব কিছু নিয়েই গড়ে উঠে সাংস্কৃতিক পরিমন্ডল। আর তাই একজন সংস্কৃতিকর্মীর মানুষকে সেই অমৃত-ভুবনের সন্ধান দেওয়ার মতো বড় কাজটি করতে হয়, ঘুচিয়ে দিতে হয় মানুষে মানুষে বিচ্ছিন্নতা।

আমাদের এক সমৃদ্ধ অতীত আছে। আছে বর্ণাঢ্য ইতিহাস-ঐতিহ্য। সকল ধর্ম-বর্ণ-জাতি নির্বিশেষে বিশ্বমানব হওয়ার আকাক্সক্ষা রয়েছে। আমাদের লালন, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল আছে। আমরা নূরলদীন আর সূর্যসেন-প্রীতিলতার উত্তরাধিকার। আমরা বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধিকার। আমাদের হাতেই তো সকল শক্তি ন্যস্ত করেছে মহাকাল। জ্বলে ওঠতে হবে। ছিন্নভিন্ন করে দিতে হবে বাঙালি সংস্কৃতিবিরোধী মৌলবাদের হিংস্র থাবা। কোটি কণ্ঠে ধ্বণিত হোক চিরন্তন সাম্যের বাণী-‘সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই’।

প্রায় সবারই জানা, তবুও মুজিব শতবর্ষে দাঁড়িয়ে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, মুসলিম লীগের একজন সাধারণ কর্মী হিসেবে যাত্রা শুরু করে ’৪৯ এ আওয়ামী মুসলিম লীগ, ’৫৫তে আওয়ামী লীগের পথ তৈরি করে ’৬৯এ হয়েছেন বঙ্গবন্ধু, ’৭১ এ অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের যাত্রা শুরু করে দিয়ে হয়েছেন জাতির জনক। এখানেই থেমে থাকেননি। ’৭৫ এ দিয়েছিলেন বৈষম্যহীন শোষনমুক্ত একটি দেশ গড়ার পথরেখা। কিন্তু করতে দেওয়া হয়নি। নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ কথা আগেই বলেছি। বৈষম্যহীন শোষণমুক্ত একটি দেশ বা সমাজের সাথে ওতোপ্রোতভাবে সম্পর্কিত অসাম্প্রদায়িক চেতনা। তাই জাতির জনকের জীবন ও কর্মের মূল সুরকে ধারণ করে অসাম্প্রদায়িক চেতনা বাস্তবায়নে জাতির জনকের চাওয়া বৈষম্যহীন শোষণমুক্ত একটি দেশ বিনির্মাণে আমাদেরকে প্রয়াস চালাতে হবে। অন্যভাবে বললে, একটি বৈষম্যহীন শোষণমুক্ত একটি দেশ বিনির্মাণের মধ্যে দিয়ে ঘটাতে হবে অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিকাশ ও বাস্তবায়ন। যদিও এটি রাজনীতির কথা, কিন্তু হাঙ্গেরীয় দার্শনিক লুকাচ যেমনটা বলেছেন ‘সংস্কৃতিই লক্ষ্য, রাজনীতি সেই লক্ষ্যে পৌঁছার পথ মাত্র’-সকল সংস্কৃতিকর্মীর মনে-প্রাণে এটিও ধারণ করতে হবে।

স্বপন পাল– কবি, প্রাবন্ধিক ও সংস্কৃতীকর্মী।

Tags: চাতালপ্রবন্ধস্বপন পাল
Previous Post

প্রবন্ধ।।মহাত্মা গান্ধী ও রবীন্দ্র্রনাথ : একটি বারোয়ারী উপলব্ধি।। আলমগীর শাহরিয়ার

Next Post

প্রবন্ধ।। শিল্প-সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষকতা প্রসঙ্গে।। স্বকৃত নোমান

Chatal

Chatal

Next Post

প্রবন্ধ।। শিল্প-সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষকতা প্রসঙ্গে।। স্বকৃত নোমান

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • About
  • Advertise
  • Privacy & Policy
  • Contact
বাংলামটর, ঢাকা-১০০০, বাংলাদেশ।
ই-মেইল: [email protected]

© 2021 Chatalbd - Design & Developed By Developer Rejwan.

No Result
View All Result
  • হোম
  • পরিচিতি
  • প্রবন্ধ
  • কবিতা
  • গল্প
  • সাক্ষাৎকার
  • বই আলোচনা
  • আলোকচিত্র
  • প্রতিবেদন
  • অনুবাদ সাহিত্য
  • বিশেষ আয়োজন
  • বিবিধ
  • কবি-লেখকবৃন্দ

© 2021 Chatalbd - Design & Developed By Developer Rejwan.

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In